প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ১২:৫১ এএম
প্রতীকী ছবি
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানায় জেলা ছাত্রদলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী হিসেবে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন। অভিযুক্তরা সকলেই স্থানীয় এবং ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা হলেও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩১ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইবি থানাধীন হরিনারায়নপুর বাজারে অবস্থিত ফেব্রিকোন গার্মেন্টস নামক দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন দোকানে অফার মূল্যে পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে একটি জাঁকজমকপূর্ণ প্রচারনা চলছিল, যেখানে ইউটিউবারসহ শতাধিক ক্রেতা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দোকানে বেচাকেনা জমজমাট চললেও হঠাৎ করেই দোকানের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন একদল যুবক।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জামির হোসেনের নেতৃত্বে সদর থানা ছাত্রদল নেতা অনিক হাসান, খাতের আলী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জুলহক আহমেদ ও ছাত্রদল নেতা সুমন হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।
একপর্যায়ে দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে বাইরে গেলে অভিযুক্তরা দোকানের বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। এরপর দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা ও মূল্যবান কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন দুলাল হোসেন। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয়ই হরিনায়নপুর ইউনিয়নের পূর্ব আব্দালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মুঠোফোনে কথা বললে দুলাল হোসেন বলেন, “জামির হোসেনের ইন্ধনে আমার দোকানে চুরি হয়েছে। আমি গরিব মানুষ, দয়া করে আমার লুট হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত দিন। তারা কে কোন দলের সেটা আমার দেখার বিষয় নয়।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত জামির হোসেন দাবি করেন, “ঘটনার দিন দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আমি জেলা বিএনপির অফিসে ছিলাম। এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জুলহক আহমেদ বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজে তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। যদি আমাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, আমরা শাস্তি মাথা পেতে নেব।”
এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি জানান, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। অভিযুক্তরা দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান বলেন, “অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত চলছে, প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাটি এখন এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
আপনার মতামত লিখুন :