ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
amaderkhobor24.com

মানিকগঞ্জে হেলে পড়া সেতুটি যেন ‘মৃত্যুফাঁদ’

আমাদের খবর ২৪

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম

মানিকগঞ্জে হেলে পড়া সেতুটি যেন ‘মৃত্যুফাঁদ’

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গাজীখালী নদীর ওপর নির্মিত বিকল্প বেইলি সেতুটি এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।

নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না করায় বৃষ্টিতে সেতুর একপাশের পাঁচ ফুট মাটির নিচে দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত মেরামত করা হবে।

স্থানীয়রা জানান, বিকল্প এই সেতু দিয়ে শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করেন। সাটুরিয়া উপজেলার বাসিন্দারা ছাড়াও এ পথ দিয়ে ঢাকার ধামরাই ও টাংগাইলের নাগরপুর উপজেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে সাটুরিয়ার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।

প্রতি সপ্তাহে হাটের দিন বৃহস্পতিবার হাজার হাজার মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু ভারি বৃষ্টিতে সেতুটির একপাশ দেবে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ফেলেছে স্থানীয়দের। সেতুটি পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটছে।

সেতুর গোড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুতে উঠতে নিষেধ করে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ব্যানারে লেখা, ‘সাবধান! ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতু! সর্ব সাধারণের চলাচল নিষেধ।’ তবে কর্তৃপক্ষের দেওয়া আদেশ কর্ণপাত করছে না জনসাধারণ। ঝুঁকি নিয়েই সেতু পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা।

২০১০-১১ অর্থ বছরে গাজীখালী নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প পাশ হলেও ২০১৩ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেই সময় বিকল্প হিসেবে বেইলি সেতুটি স্থাপন করা হয়। তখন থেকে বিকল্প এই সেতুটি স্থানীয়দের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম হয়ে ওঠে।

২০১৫ সালের অক্টোবরে জনসাধারণের জন্য নতুন সেতু খুলে দেওয়া হয়; তবে স্থানীয়রা বিকল্প বেইলি সেতুটি আর অপসারণ করতে দেয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মূল সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করে থাকে। আর বিকল্প বেইলি সেতুটি দিয়ে জনসাধারণ হেঁটে চলাচল করেন। সময় বাঁচাতে ওই সেতু দিয়ে কয়েকটি এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত ফসল হাটে নেওয়া হয়।

সাটুরিয়া বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী বলেন, মূল সেতু নির্মিত হওয়ার সময় তৈরি বিকল্প এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আশা-যাওয়া করেন। সম্প্রতি সেতুটির একপাশ দেবে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে তাদের পারাপার হতে হয়। দ্রুত সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

সাটুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিকল্প বেইলি সেতুর পাটাতনে মরিচা ধরেছে। একাধিক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাটাতন আগলা থাকায় রাতে পারাপারের সময় অনেকেই গর্তে পড়ে আহত হন।

“সেতু দিয়ে চলাচলকারী মানুষের কথা চিন্তা করে পাটাতনগুলো নিজ খরচে মেরামত করে দিয়েছি। বিশেষ করে হাসপাতালের যাওয়া-আসা করা রোগীদের কথা চিন্তা করে হলেও সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন।”

মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবাশীষ সাহা বলেন, বিকল্প এই সেতু দিয়ে জনসাধারণকে চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর আগে সেতুটি অপসারণে উদ্যোগ নেওয়া হলেও জনসাধারণের অনুরোধ আর বাধায় তা সম্ভব হয়নি।

তবে সেতুটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।

Link copied!