ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
amaderkhobor24.com
কুষ্টিয়া হরিনারায়নপুর

সংঘবদ্ধ দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় নারী ইউপি সদস্য নির্যাতিত

আমাদের খবর ২৪

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম

সংঘবদ্ধ দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় নারী ইউপি সদস্য নির্যাতিত

আহত নারী ইউপি সদস্য রূপসী আক্তার

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দীর্ঘদিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এক নারী ইউপি সদস্য শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার রূপসী আক্তার (৩০) ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। এ বিষয়ে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সম্রাট (৩২), সদস্য এনামুল হক ডাবলু (৫৫) ও আবু বক্কর (৪০)। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মশিউর রহমান অভিযুক্তদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে লিপ্ত হয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ৮ জুলাই সকাল ১০টায় ভিডব্লিউবি সভায় অংশ নিতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সময়মতো সভা না হওয়ায় রূপসী আক্তার তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এরপর চেয়ারম্যান সম্রাট ও অন্য সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে সভা গোপনে সেরে ফেলার কথা জানান। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানালে চাপের মুখে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জোরপূর্বক রেজুলেশনে সই নিতে চাইলে রূপসী আপত্তি জানান। এতে চেয়ারম্যান রেগে গিয়ে তাকে মারধরের নির্দেশ দেন।

চেয়ারম্যান সম্রাট সভা ত্যাগ করার পর এনামুল হক ডাবলু ও আবু বক্কর রূপসীকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন, এতে তার ঠোঁট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। স্থানীয়রা চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগের আগে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।

রূপসী আক্তার দাবি করেন, চেয়ারম্যান ও সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বরাদ্দকৃত প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন। বিশেষ বরাদ্দকৃত ৩০০ টন চালের আওতায় গঠিত প্রতিটি ৬.৬ লাখ টাকার প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রকল্প বাস্তবায়নই হয়নি। সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী খাঁর নির্দেশে পিআইসি সদস্যদের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়।

১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য লাইলি আক্তার বলেন, “আমাকে একটি প্রকল্পের পিআইসি করা হয়েছিল, কিন্তু প্রকল্পের কোনো কিছুই আমি জানতাম না। আমার সই নিয়ে জোরপূর্বক টাকা তুলে নেওয়া হয়।”

ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অনেক পিআইসি সদস্যকে প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানানো হয় না, কিন্তু টাকা তোলার সময় তাদের সই নেওয়া হয় এবং বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত হরিনারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সম্রাট অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "রূপসী নিজেই গর্ভবতী ভাতা ভোগ করেন, তার ভাইও ভাতা নিচ্ছে। তিনি সবসময় পরিষদে তর্ক করেন এবং অন্য সদস্যদের সরাতে চান। সব বিল যথাযথভাবে তদন্ত করে পাস হয়েছে।"

ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, “মেহেদী হাসান সম্রাট এজাহারভুক্ত আসামি নন। তবে অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!