ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বিএনপির আসল আন্দোলন তফসিলের পর?

আমাদের খবর ২৪

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৯:৩০ পিএম

বিএনপির আসল আন্দোলন তফসিলের পর?

এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবর তাদের মহাসমাবেশে তারা নিজেরাই আত্মঘাতী হয়ে ওঠে। আক্রমণ করে প্রধান বিচারপতির বাসভবন, পুলিশ হাসপাতাল। পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলামকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করে বিএনপির কর্মীরা। এরপর থেকে টানা কর্মসূচির মধ্যে আছে বিএনপি। অবরোধ ডাকা হয়েছে তিন দফায়। আজ তৃতীয় দফার অবরোধ শেষ হয়েছে।

আগামী রোববার থেকে বিএনপি আবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই ধরনের কর্মসূচিগুলো ক্রমশই অকার্যকর হয়ে উঠছে। বিশেষ করে তৃতীয় মেয়াদের অবরোধ উপেক্ষা করে জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। যদিও দূরপাল্লার পরিবহনসহ ঢাকার বাইরে বিভিন্নস্থানে নানারকম সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

তবে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, এতদিন তারা যে কর্মসূচি করেছে সেটি শুধু মাত্র রিহার্সেল। আসল কর্মসূচি তারা শুরু করবে তফসিল ঘোষণার পর। বিএনপির সেই প্রস্তুতি রয়েছে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নেতাকর্মীদের এখন পালিয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি খুব একটা পিকেটিং করছেন না। শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য বা টেলিভিশন কভারেজ পাওয়ার জন্য রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে একটি মিছিলের প্রদর্শনী হচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় হালকা পিকেটিং হচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ ধরনের কর্মসূচিগুলোর ব্যর্থতা নিয়ে বিএনপির মধ্যে কোন ধরনের অনুশোচনা লক্ষ করা যাচ্ছে না। বরং তাদের মধ্যে কোন কোন নেতা বলছেন যে এই কর্মসূচিতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সামনে তারা বড় ধরনের প্রস্তুতি নেবে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, পরিকল্পিতভাবে বিএনপি তাদের কর্মসূচি রেখেছে এবং এই কর্মসূচিগুলোতে পুরো শক্তি ক্ষয় না করে নির্বাচনের তফসিল পর্যন্ত অপেক্ষার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির আসল আন্দোলন শুরু করবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। আসল আন্দোলন কী? এর উত্তরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা বলছেন, তারা আরও জঙ্গি অবস্থায় আসবেন এবং সেই প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। যে সমস্ত নেতারা আত্মগোপনে আছেন, তাদের মধ্যে সশস্ত্র জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী নেতার সংখ্যা কম নয়। এই সশস্ত্র গ্রুপটি মাঠে নামবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। তখন তারা রাস্তায় যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধা দেবে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে হামলা করবে। এমনকি টার্গেট কিলিংয়ের পথে যেতে পারে বলেও একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। অর্থাৎ তারা এমন কর্মসূচি করতে চায় যাতে জনগণের মধ্যে একটা ভীতির সঞ্চার হবে, জনগণ ঘর থেকে বের হবে না। আর এর ফলে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এখন পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচির এটিই লক্ষ্য। আর এই কারণেই তারা এখনই সমস্ত লোকজনকে রাস্তায় নামিয়ে শক্তি ক্ষয় করতে চায় না। বিএনপি জানে যে, যারা রাস্তায় নামবে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য তারা আত্মগোপনে আছে। নির্দিষ্ট সময়ে তারা বের হবে এবং সহিংস রাজনীতি করবে।

কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির এই পথ ভুল পথ। তারা যদি গাড়ি ভাঙচুর করে, জনজীবন বিপর্যস্ত করতে চায় তাহলে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। আর জনগণ যদি প্রত্যাখ্যান করে তাহলে কোনও আন্দোলনই শেষপর্যন্ত সফল হতে পারে না। বিএনপির মধ্যেই অবশ্য আন্দোলন নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। বিএনপির কোন কোন নেতা এখনও আশাবাদী যে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সমঝোতার পথে আসবে এবং সরকারের সাথে একটি আপোসরফা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন যে, বিএনপিকে বাঁচানোর এটাই একমাত্র উপায়।

Link copied!