প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
ছবি: আমাদের খবর ২৪ ডটকম
ছয় দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন কুষ্টিয়া পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে তারা শহরের মজমপুর মোড়ে সড়ক অবরোধ করে।
অবরোধে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ঘন্টাব্যাপী অবরোধের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সড়কে চলাচলকারী মানুষ পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমারা ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। আগেও আমরা একই দাবিতে একাধিকবার কর্মসূচি পালন করেছি। তবে আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি না মানা হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবো আমরা।
পথচারী ও জানযটে আটকে পড়া গাড়িচালকরা বলেন, ঘন্টাব্যাপী সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। চারদিকের সড়ক বন্ধ হয়ে যানজট তৈরি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতিম শীল ও কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশারফ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
শিক্ষার্থীরা যে ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন, এর মধ্যে আছে, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :